শুক্রবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২০

ভ্যাম্পায়ার সম্পর্কে ২০টি অবাক করা তথ্য যা আপনি জানতেন না

 

ভ্যাম্পায়ার সম্পর্কে ২০টি অবাক করা তথ্য যা আপনি জানতেন না



কাউন্টেস এলিজাবেথ বাথোরী নামে এক নারী ভ্যাম্পায়ারের কথা বলা হয় যিনি নিজের সৌন্দ্যর্য ধরে রাখার জন্য রক্ত পান বা রক্ত দিয়ে গোসল করতেন। কুখ্যাত ভ্যাম্পায়ার কাউন্ট ড্রাকুলার প্রিয় উক্তি ছিলো রক্তই জীবন, জীবন মানেই রক্ত। এছাড়া তৃতীয় ভ্লাদ ড্রাকুলা ২০ হাজার তুর্কী যোদ্ধার মরদেহ বর্শায় গেথে দানিয়ুব নদীর তীর ধরে পুতে দিয়েছিলেন। ভ্যাম্পায়ার সম্পর্কে জানুন এমনি ২০টি অবাক করা তথ্য যা আপনি জানতেন না।


ভ্যাম্পায়ার সম্পর্কে ২০টি অবাক করা তথ্য যা আপনি জানতেন না



ভ্যাম্পায়ার শব্দের উতপত্তি নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। কারো মতে হাঙ্গেরিয়ান শব্দ ভ্যম্পির বা তুর্কি শব্দ উপিয়র থেকে এসেছে শব্দটি। গ্রিক শব্দ নসোফোরোস থেকেও ভ্যাম্পায়ারের উত্তপত্তি হতে পারে বলে মনে করেন অনেকে।

ভ্যাম্পায়ারদের সংঘবদ্ধ দলকে বলা হয় ক্লাচ, ব্রুড, কোভেন, প্যাক বা ক্ল্যান।

ছয় হাজার বছর আগে প্রাচীন সুমেরীয় এবং ব্যবিলনীয় সভ্যতার মানুষরাও ভ্যাম্পায়ারে বিশ্বাস করতো বলে মনে করা হয়। একিমো বা এডিমো নামে এক ধরনের পিশাচকে ভয় পেতে তারা যারা মানুষের আত্মা চুষে নিতো বলে বিশ্বাস করা হতো

নব্যপ্রস্তুরযুগের কিছু সমাধীর ওপর স্থাপন করা পাথরখন্ড থেকে গবেষকরা জানতে পারেন ওই পাথরগুলো রাখা হয়েছিলো যাতে কবরে শায়িত ব্যক্তি ভ্যাম্পায়ারে পরিণত হতে না পারে।

প্রাচীণ মিশরীয়রদের বিশ্বাস ছিলো মৃতকে ঠিকমতো সমাহিত না করা হলে সে অতৃপ্ত আত্মায় পরিণত হয় এবং মানুষের রক্ত পা করে বেড়ায়। মিশরীরদের দেবি সেখমেট রক্ত পান করতো বলে জানা যায়।



পরফিরিয়া নামে এক ধরনের বিরল রোগের অস্তিত আছে যাকে বলা হয় ভ্যাম্পায়ার বা ড্রাকুলা রোগ। এই রোগে আক্রান্তরা ভ্যাম্পায়ারের মতোই আচরণ করে। সূর্যের আলো সহ্য না হওয়া বা দাত ক্রমশ বাদামি হয়ে যাওয়া এবং পরে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা এই রোগের লক্ষণ।

সম্ভবত সবচেয়ে কুখ্যাত ভ্যাম্পায়ার কাউন্ট ড্রাকুলার প্রিয় উক্তি ছিলো রক্তই জীবন, জীবন মানেই রক্ত।

১৫ শতকের মাঝামাঝি রোমানিয়ার ওয়ালাচিয়া নামের একটি রাজ্যের শাসক তৃতীয় ভ্লাদ ড্রাকুলা ২০ হাজার তুর্কী যোদ্ধার মরদেহ বর্শায় গেথে দানিয়ুব নদীর তীর ধরে পুতে দিয়েছিলেন। তিনি শত্রুর রক্তও পান করতেন বলে কথিত আছে। বলা হয় ভ্যাম্পায়ারের কিংবদন্তি শুরু হয়েছিলো তার মাধ্যমেই।

কাউন্টেস এলিজাবেথ বাথোরী নামে এক নারী ভ্যাম্পায়ারের কথা বলা হয় যিনি নিজের সৌন্দ্যর্য ধরে রাখার জন্য রক্ত পান বা রক্ত দিয়ে গোসল করতেন।

একসময় মনে করা হতো ভ্যাম্পায়াদের আত্মা থাকে না যে কারণে আয়নায় তাদের ছায়া পড়ে না।

ইউরোপে রক্তশুন্যতায় আক্রান্ত নারীদের ক্ষেত্রে একসময় মনে করা হতো তারা ভ্যাম্পায়ারের শিকার।

একসময় বিশ্বাস করা হতো ভ্যাম্পায়াররা জীবজন্তদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারে এবং  ইচ্ছেমতো বাদুর পেচা বা নেকড়ের আকার নিতে পারে।

চীন দেশে ভ্যাম্পায়ারকে বলা হয় চিয়াং শিহ্। রক্তবর্ণ চোখের এই ভ্যাম্পায়াররা একসময় প্রচুর ক্ষমতা পেয়ে যায় এবং আকাশে উড়তে পারে বা রূপ বদলাতে পারে।

প্রাচীন এবং মধ্যযুগে ভ্যাম্পায়ার সন্দেহে অনেক মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। বুকের মধ্যে কাঠ বা লোহার গজাল ঠুকে ভ্যাম্পায়ার হত্যা করার এই রীতিটি অনেকদিন প্রচলিত ছিলো।

মধ্যযুগে প্লেগের মতো মহামারী ছড়ানোর জন্য ডাইনী এবং ভ্যাম্পায়ারদের দায়ী করা হতো এবংএজন্য অনেককে শিকার হতে হয়েছে নির্মম হত্যাকান্ডের।

১৮ শতকের দিকে ভ্যাম্পায়ার বিশ্বাস এতটাই গভীর ছিলো যে অনেক দেশে মৃতদের কবর থেকে তুলে আবারো হত্যা করা হতো যাতে তারা কোনোভাবেই ফিরে আসতে না পারে। অনেক দেশে আইন করে এই ধারা বন্ধ করা হয়েছিলো।

প্রচলিত বিভিন্ন জনশ্রুতি থেকে জানা যায় কেউ যদি ভ্যাম্পায়ারের কামড় খায়, ভ্যাম্পায়ারে পরিণত হওয়া এড়াতে তাকে ভ্যাম্পায়ারের শরীর পুড়িয়ে ছাই খেতে হবে। 

ভ্যাম্পায়র তাড়াতে রসুনের ব্যবহার ছিলো দুই হাজার বছরের বেশি সময় ধরে। ভ্যাম্পায়ার থেকে দূরে থাকতে আগুন, লবন, লোহা ইত্যাদিও ব্যবহার করা হতো।

সাহিত্য বা চলচিত্রেও ভ্যাম্পায়ারের জনপ্রিয়তা কম নয়। ৩শর বেশি মুভি বা এক হাজারের বেশি জনপ্রিয় সাহিত্য রচিত হয়েছে ভ্যাম্পায়ার এবং কাউন্ট ড্রাকুলাকে নিয়ে।

ভ্যাম্পায়ার নিয়ে লেখা প্রথম সাহিত্যকর্ম জন উইলিয়াম পলিডরির ‘দ্যা ভ্যাম্পায়ার’ যা ১৮১৯ সালে প্রকাশিত হয়েছিলো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন